ডরিমন, সুপারম্যান,স্পাইডারম্যান, হিমু এই সবগুলোর মাঝে শিরক মিশ্রিত আছে। আপনি এবং আপনার সন্তানদেরকে এইসমস্ত মায়াবী শয়তানী ধোঁকা থেকে দূরে রাখুন!! প্রথমেই বলে নেই, যেই সমস্ত বাবা মায়েরা আদর করে ছোটো ছোটো ছেলে মেয়েদের হাতে নাচ, গান, কার্টুন, ভিডিও গেমস, গল্পের বই তুলে দিয়ে একেবারে জন্ম থেকেই তাদের সন্তানদের পথভ্রষ্ট হওয়া মোটামুটি নিশ্চিত করছেন, কেয়ামতের দিন তাদেরকে তাদের
প্রাণপ্রিয় সন্তানেরা কি প্রতিদান দেবে? “কাফেররা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! যেসব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, তাদেরকে দেখিয়ে দাও, আজকে আমরা তাদেরকে পদ দলিত করব, যাতে করে তারা যথেষ্ট অপমানিত হয়।” [সুরা ফুসসিলাত, আয়াত ২৯] সুতরাং, দেখা যাচ্ছে কোনো মানুষ বা জিন যদি
অন্য কারো পথভ্রষ্ট হওয়ার কারণ হয়, তাহলে কেয়ামতের দিন সে আল্লাহর কাছে দুয়া করবে, যার কারণে সে
জাহান্নামে যাবে তাকে তার পায়ের নিচে দেওয়ার জন্য যাতে করে সে অপমানিত হয়। অতএব, আমাদের মধ্যে
যারা বাবা মা, আমাদের খেয়াল রাখা উচিত এতো আদর-যত্ন করে যে সন্তানদের লালন-পালন করছি, ইসলাম বিমুখ করে গড়ে তোলার জন্য কেয়ামতের দিন যেনো তাদের পায়ের নিচে লাঞ্চিত হতে না হয়। লা হা’উলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ, ওয়াল্লাহু মুস্তাআ’ন। এবার আসি আলোচ্য বিষয়ে….
ডরিমনঃ যতদূর মনে পড়ে, আমি জীবনে ডরিমনের একটা পর্ব দেখেছিলাম আর দেখা শুরু করার মাত্র ৩ মিনিটের মাথায় এর মাঝে শিরক চোখে পড়েছিলো। এই কার্টুনের শিরকের মধ্যে রয়েছে, ভবিষ্যত দেখতে পারা, রোবটকে সুখ শান্তির কারণ মনে করা, তাকদীর সম্পর্কে মারাত্মক শিরক ও কুফুরী আকীদা প্রচার করা।
স্পাইডারম্যান ও সুপারম্যানঃ বিপদে পড়লে মানুষ আল্লহকে ডাকে আর আল্লাহই মানুষের বিপদের ত্রাণকর্তা। এই কার্টুন ও মুভিতে একটা কাল্পনিক চরিত্রকে দেখানো হয় বিপদের ত্রাণকর্তা হিসেবে। আর এই জন্য,
দেখানো হয় মানুষ বিপদে পড়ে স্পাইডারম্যানকে দূর থেকে ডাকছে, যা নির্ভেজাল শিরক। এছাড়া স্পাইডারম্যনকে কখনো কখনো আলেমুল গায়েব বা অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞানী হিসেবেও দেখানো হয়।
হিমুঃ হিমুর একটা গুণ হলো সে ভবিষ্যত দেখতে পারে (নাউযুবিল্লাহ)! আশ্চর্যের বিষয় এইরকম ডাহা শিরক সমৃদ্ধ বই আজকালকার মুসলমানেরা পড়ে, বিনোদনের জন্য। আসলে রাসুল (সাঃ) এর কথাই ঠিক। তিনি বলেন,
“আকর্ষণীয় ও হৃদয়গ্রাহী জিনিস সমূহ দিয়ে জাহান্নামকে আড়াল করে রাখা হয়েছে।” যে সমস্ত কবি সাহিত্যিকরা শিরকি কুফুরী গল্প/কবিতা লিখে বা বলে, ইসলাম বিরোধী জেনা ব্যভিচারের গল্প লিখে, অশ্লীল নাটক সিনেমা বানায় আর মানুষকে পথভ্রষ্ট করে তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেনঃ এদের উপর শয়তান নাযিল হয়। শয়তান
এদের উপর ভর করে যা শিখিয়ে দেয় এর মাধ্যমে তারা তাদের ভক্ত ও পাঠকদের ব্রেইন ওয়াশ করে ও পথভ্রষ্ট করে। দেখুন আল্লাহ কি বলেছেন, ভ্রান্ত কবি সাহিত্যিকদের সম্পর্কেঃ “আমি কি আপনাকে বলে দেব, শয়তানরা কার উপর অবতরণ করে? তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক মিথ্যাবাদী, গোনাহগারের উপর। তারা শোনা কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী”। [সুরা আশ- শুআরা, আয়াত ২২১-২২৩] আল্লাহ এই আয়াতগুলোতে
কবি সাহিত্যিকদের যে কয়টি গুণ উল্লেখ করেছেনঃ ১. তাদের উপর শয়তানরা ভর করে ২. তারা গুনাহগার এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী ৩. তারা শয়তানের শিখানো কথা মানুষের কাছে পোঁছে দেয়। এর মাধ্যেম আসলে শয়তান লেখক ও কবিদেরকে ব্যবহার করে, মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য। এই জন্যই এই সমস্ত লেখকরা
এতো জনপ্রিয়তা পায়, শয়তানের সাহায্য নিয়ে। আর এই সমস্ত কবি সাহিত্যিকদের লেখা, গল্প, উপন্যসা অথবা ভুয়া কাল্পনিক চরিত্রকে যারা ভালোবাসে, তাদেরকে অনুসরণ করে, আল্লাহ তাদেরকে পথভ্রষ্ট বলেছেন। “পথভ্রষ্ট লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে। তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়? এবং এমন কথা বলে, যা তারা করে না।” সুরা আশ-শুআরা, আয়াত ২২৪-২২৬। হিমু যে শয়তানের শিখিয়ে দেওয়া একটা চরিত্র, তার ডাইরেক্ট প্রমান পাওয়া যায় এই হাদীসটা দিয়ে, “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আলি (রাঃ) কে দুইটি হলুদ রঙয়ের কাপড় পড়া অবস্থায় দেখলেন। তিনি তখন বলেনঃ এই রঙ কাফেরদের জন্য, এই রঙের কাপড় পড়োনা।” [সহীহ মুসলিম ২০৭৭] কেনো লেখক অন্য কোনো রঙ বাদ দিয়ে হলুদটাই বেছে নিলো হিমুর কাপড়ের রঙ হিসেবে? একটু বিবেচনা করুন ও সতর্ক হন।
***কৃতজ্ঞতাঃ মনসুর আলম***