পোশাকের কারণে জাহান্নামী

একটু চিন্তা করুন ও সতর্ক হন
___________________________________
পোশাকের কারণে জাহান্নামী
>> পুরুষঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তিন প্রকার লোক এমন রয়েছে,
– যাদের সাথে আল্লাহ কথা বলবেন না,
– কেয়ামতের দিন তাদের দিকে তাকাবেন না,
– তাদেরকে পবিত্র করবেন না
বরং, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।”
আমি (আবু হুরাইরা) বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তারা কারা? ওরা তো ক্ষতিগ্রস্ত!
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তারা হচ্ছে,
(১) টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী (পুরুষ),
(২) ব্যবসার সামগ্রী মিথ্যা কসম দিয়ে বিক্রয়কারী এবং
(৩) কাউকে কিছু দান করার পর তার খোটাদাতা।”
সহীহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, নং ২৯৪।
.
কলেজ-ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া অনেক যুবক ভাইয়েরা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের মতো টাখনুর নীচে প্যান্ট পরছেন। অনেকে রাসুল (সাঃ) এর আদেশ মোতাবেক টাখনুর উপরে প্যান্ট পরতে লজ্জা পায়…লোকে কি বলবে?
সুবহা’নাল্লাহ!
আজকাল অনেক মুসলিম নামধারী মহিলারা লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে যৌন উত্তেজক, খোলামেলা পোশাক পড়ে রাস্তায় বের হচ্ছে, টাখনুর উপরে টাইটস পড়ছে। অনেক মহিলারা চরিত্রহীন, ব্যভিচারী নায়িকা/গায়িকাদের অনুকরণ করে টাখনুর উপরে পোশাক পরতে লজ্জা বোধ করছেনা।
পক্ষান্তরে, আমাদের যুবক ভাইয়েরা নিজেদেরকে মুসলমান দাবী করে, কিন্তু নিজেকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাচানোর জন্য টাখনুর উপরে প্যান্ট পরার সাহস পায় না।
.
>> নারীঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “(আমার পরে) দুই প্রকার জাহান্নামী মানুষ আসবে, যাদেরকে আমি আমার যুগে এখনো দেখতে পাচ্ছিনা।
এক প্রকার হচ্ছে, ঐ সকল মহিলা যারা “কাপড় পরিধান করেও উলংগ” থাকবে। তারা সাজ-সজ্জা করে পর পুরুষকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও অন্য পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট থাকবে। তাদের মাথার খোপা (সাজ সজ্জা ও ফ্যাশানের দরুণ) উটের কুঁজের মত এদিক ওদিক হেলানো থাকবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এমনকি তারা জান্নাতের সুগন্ধিটুকুও পাবে না। অথচ, জান্নাতের সুগন্ধি পাঁচশ বছর রাস্তার দূরত্ব থেকেও অনুভব করা যাবে।” সহীহ মুসলিমঃ ২১২৮।
.
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসের ব্যখ্যায় বলেছেন, “কাপড় পড়েও উলংগ কথাটির অর্থ হচ্ছেঃ সেই সমস্ত নারী, যারা এতো পাতলা কাপড় পরিধান করে যে, কাপড়ের মধ্য দিয়ে তাদের গায়ের চামড়া দেখা যাবে। অথবা এমন টাইট পোশাক পরবে যে, যার কারণে তাদের শরীরের আকৃতি বোঝা যায়।” মাজমু’ ফাতাওয়াঃ ১৪৬/২২।
.
হে মুসলমান ভাইয়েরা সাবধান!
আপনার স্ত্রী, কন্যা, বোন যদি “তাবাররুজ” করে রাস্তায় বের হয়, খোলামেলা, অশ্লীল পোশাক পরে পুরুষদের যৌন সুড়সুড়ি দিয়ে বেড়ায়, তাহলে আপনি একজন দাইয়ুস। আপনি নামায রোযা করেও, সাদা দাড়ি, লম্বা পায়জামা পরেও, সিজদা দিতে দিতে কপালে কালো দাগ ফেলে দিলেও আপনার ঘরের বেপর্দা, অশ্লীল নারী কেয়ামতের দিন আপনাকেসহ জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
.
>> Hell is not a JOKE.
জাহান্নামের কঠিন শাস্তির সামান্য বর্ণনাঃ
আল্লাহ তায়া’লা বলেন “নিশ্চয়ই সীমালংঘনকারী অবাধ্য লোকদের জন্যে জাহান্নাম শত্রুর মতো ওত পেতে বসে আছে, তাদেরকে গ্রাস করার জন্য। তারা সেখানে শতকের পর শতক ধরে থাকবে। কিন্তু সেখানে তারা তৃপ্তিদায়ক কোন খাবার বা পানি খেতে পারবেনা। তাদেরকে শুধুমাত্র ফুটন্ত গরম পানি ও দুর্গন্ধযুক্ত পচা পূজ খাওয়ানো হবে। এটাই হচ্ছে তাদের উপযুক্ত প্রতিদান, কারণ তারা হিসাব-নিকাশের কোন পরোয়া করতোনা। আর আমার আয়াত (বা নিদর্শন) সমূহকে মিথ্যা বলতো।”
সুরা আন-নাবার ২২-২৮ আয়াতের তর্জমা থেকে নেওয়া।
___________________________________
ফতওয়াঃ দাঁড়ি শেইভ করা ও টাখনুর নিচে কাপড় পড়া হারাম
.
একবার আমি দাঁড়ি নিয়ে একটা পোস্ট দেই, খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম বিশেষ একটা দলের লোকেরা সেই পোস্টে দাঁড়ির রাখার ব্যাপারে চরম আপত্তি জানিয়েছেন। দাঁড়ি রাখা নাকি সুন্নত, দাড়ি রাখা ছোটোখাটো বিষয়, এইগুলো নিয়ে কথা বললে নাকি ফেতনা সৃষ্টি হয়! এরকম ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে নাকি মুসলিমদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা ঠিকনা!
কুরান ও সুন্নাহ বিরোধী সম্পূর্ণ মনগড়া তাদের কথা বার্তা।
.
আবার অনেকে ইয়াহুদী খ্রীস্টানদের অনুকরণে ফ্রেঞ্চ কাট বা খোচা খোচা স্টাইলিশ দাঁড়ি রেখে মনে করছেন – আমি ইসলাম পালন করছি। যাই হোক, দাঁড়ি রাখা ও টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়া এমন একটা বিষয় অনেক মুসলমান পুরুষের মাঝে কম-বেশি গাফিলতি লক্ষ্য করা যায়।
আজকে তাই পুরুষদের মাঝে খুব বেশি দেখা যায় এমন দুইটি বিষয় নিয়ে একজন আলেমের ফতওয়া অনুবাদ করে দেওয়া হলো।

ফতোয়া দিয়েছেনঃ বর্তমান সৌদি আরবের সম্মানিত প্রধান মুফতি, ফতওয়া বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও বহু গ্রন্থ প্রণেতা শায়খ আব্দুল আজীজ ইবনে আব্দুল্লাহ আলে আশ-শায়খ (হা’ফিজাহুল্লাহ)।
.
(((ফতওয়া))))
প্রশ্নকারীঃ আমি আপনার কাছে সঠিক উত্তর জানতে চাচ্ছি কারণ এই বিষয়টা নিয়ে আমি কিছুটা সন্দেহের মাঝে আছি। আর তা হলো দাঁড়ি শেইভ করা ও টাখনুর নিচে কাপড় পড়া নিয়ে। টাখনুর নিচে কাপড় পড়ার হুকুম কি? এটা কি সব ধরণের কাপড়ের জন্য প্রযোজ্য? আর কেউ যদি এই কাজ করে তাহলে কি সমস্যা?
.
সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি, আল্লামাহ আব্দুল আ’জীজ ইবনে আব্দুল্লাহ আলে-শায়খ শায়খ এর উত্তরঃ
দাঁড়ি ছেড়ে দেওয়া (অর্থাৎ বাড়তে দেওয়া) ওয়াজিব, দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব এবং এটা নবী (সাঃ) এর সৃষ্টিগত প্রকৃতির অন্তর্ভুক্ত।(*)

আর দাঁড়ি শেইভ করা হারাম, দাঁড়ি ছোটো করা হারাম। সুন্নাহ হচ্ছে দাঁড়ি যেইভাবে আছে ঠিক সেইভাবে ছেড়ে দেওয়া যেইভাবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। এমন কারো কথা শুনবেন না যারা বলে দাঁড়ি ছোটো করা জায়েজ, আর যে কোনো উপায়ে দাঁড়ি কাটাকে জায়েজ প্রমান করার চেষ্টা করে। এমনকি সে যদি নিজেকে আলেম দাবী করে তবুও তার কথা শুনবেন না। কারণ, নিজেকে আলেম দাবী করার মাধ্যমেই প্রমানিত হয় না যে সেই ব্যাক্তি কোন আলেম নয়। “সুন্নাহ” সবার জন্য প্রযোজ্য।

আর টাখনুর নিচে কাপড় পড়া হারাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “টাখনুর নিচে পায়ের যতটুকু অংশ কাপড় পড়া হবে সেটা জাহান্নামে যাবে।” (সহীহ বুখারী)।

তিনি (সাঃ) আরো বলেছেন, “অহংকার বশত যে (টাখনুর নিচে) কাপড় ঝুলিয়ে পড়ে বিচারের দিনে আল্লাহ্ তার দিকে তাকাবেন না” (তিরমিযী)।

“বিচারের দিনে তিন প্রকার মানুষের সাথে আল্লাহ্ কোনো কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে (গুনাহ থেক) পবিত্র করবেন না আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। এক হচ্ছে যেই ব্যাক্তি (টাখনুর নিচে) কাপড় ঝুলিয়ে পড়ে, যেই ব্যাক্তি উপকার করে খোঁটা দেয়, আর তৃতীয় হচ্ছে যেই ব্যাক্তি মিথ্যা কসম করে কোনো কিছু বিক্রি করার চেষ্টা করে।” (সহীহ মুসলিম)।
+++ফতওয়া এখানেই সমাপ্ত।

(*) আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, “তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতরা কর, দাঁড়ি লম্বা কর, আর মোচ খাট কর।”
সহিহ বুখারী ২/৮৭৫, সহীহ মুসলিম।।