মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার গুরুত্ব

পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জামাতে ও জুমআর সালাতে মহিলাদের অংশ গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সা. মেয়েদেরকে ঈদের সালাতে অংশ গ্রহণ করার জন্য শুধু অনুমতি নয়, হুকুম জারী করেছেন।*

হাদিসে এসেছে,
উম্মে আতিয়া রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সা. আদেশ করেছেন আমরা যেন মহিলাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাতে সালাতের জন্য বের করে দেই ; পরিণত বয়স্কা, ঋতুবতী ও গৃহবাসিনী সহ সকলকেই। কিন্তু ঋতুবতী মেয়েরা (ঈদগাহে উপস্থিত হয়ে) সালাত আদায় থেকে বিরত থাকবে তবে কল্যাণ ও মুসলিমদের দোয়া প্রত্যক্ষ করতে অংশ নেবে। তিনি ( উম্মে আতিয়া) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আমাদের মাঝে কারো কারো ওড়না নেই। (যা পরিধান করে আমরা ঈদের সালাতে যেতে পারে) রাসূলুল্লাহ সা. বললেন : সে তার অন্য বোন থেকে ওড়না নিয়ে পরিধান করবে। (বর্ণনায় : সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৮৮৩)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ১৩/ দুই’ঈদ (كتاب العيدين)
হাদিস নম্বরঃ ৯৭৪
১৩/১৫. নারীদের ও ঋতুমতীদের ‘ঈদগাহে যাওয়া।

৯৭৪. উম্মু ‘আতিয়্যাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন (‘ঈদের সালাতের উদ্দেশে) যুবতী ও পর্দানশীন মেয়েদের নিয়ে যাবার জন্য আমাদের নির্দেশ দেয়া হতো। আইয়ূব (রহ.) হতে হাফসাহ (রাযি.) সূত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে এবং হাফসাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত রিওয়ায়াতে অতিরিক্ত বর্ণনা আছে, ‘ঈদগাহে ঋতুমতী নারীরা আলাদা থাকতেন। (৩২৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৯২৩)

بَاب خُرُوجِ النِّسَاءِ وَالْحُيَّضِ إِلَى الْمُصَلَّى عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ أَمَرَنَا نَبِيُّنَا بِأَنْ نُخْرِجَ الْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ وَعَنْ أَيُّوبَ عَنْ حَفْصَةَ بِنَحْوِهِ وَزَادَ فِي حَدِيثِ حَفْصَةَ قَالَ أَوْ قَالَتْ الْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ وَيَعْتَزِلْنَ الْحُيَّضُ الْمُصَلَّى.

গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৯। দু’ ঈদের সালাত (كتاب صلاة العيدين)
হাদিস নম্বরঃ ১৯৩৯

১. দু’ ঈদের দিনে নারীদের ঈদগাহে যাওয়া এবং পুরুষদের থেকে পৃথক থেকে খুতবায় শারীক হওয়ার বৈধতা প্রসঙ্গে

১৯৩৯-(১০/৮৯০) আবূর রাবী’ আয যাহরানী (রহঃ) ….. উম্মু আতিয়াহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। আমাদেরকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন, আমরা যেন পরিণত বয়স্কা মেয়েদেরকে ও পর্দানশীন মেয়ে লোকদেরকে ঈদের সলাতে যাওয়ার জন্য বলি এবং তিনি ঋতুবতী নারীদেরকে আদেশ করেছেন তারা যেন মুসলিমদের সলাতের স্থান থেকে কিছুটা পৃথক থাকে। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯২৪, ইসলামীক সেন্টার ১৯৩১)
باب ذِكْرِ إِبَاحَةِ خُرُوجِ النِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ إِلَى الْمُصَلَّى وَشُهُودِ الْخُطْبَةِ مُفَارِقَاتٌ لِلرِّجَالِ حَدَّثَنِي أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ أَمَرَنَا – تَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم – أَنْ نُخْرِجَ فِي الْعِيدَيْنِ الْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ وَأَمَرَ الْحُيَّضَ أَنْ يَعْتَزِلْنَ مُصَلَّى الْمُسْلِمِينَ ‏.‏

গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৯। দু’ ঈদের সালাত (كتاب صلاة العيدين)
হাদিস নম্বরঃ ১৯৪০

১. দু’ ঈদের দিনে নারীদের ঈদগাহে যাওয়া এবং পুরুষদের থেকে পৃথক থেকে খুতবায় শারীক হওয়ার বৈধতা প্রসঙ্গে

১৯৪০-(১১/…) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ….. উম্মু ‘আতিয়াহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়) ঈদের মাঠে বের হওয়ার আদেশ করা হত এমনকি গৃহবাসিনী পর্দানশীন মহিলা ও প্রাপ্তবয়স্কা কুমারীকেও অনুমতি দেয়া হতো। উম্মু আতিয়াহ বলেন, ঋতুবতী মহিলারাও বের হয়ে আসত এবং সব লোকের সাথে তাকবীর পাঠ করত। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯২৫, ইসলামীক সেন্টার ১৯৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ

باب ذِكْرِ إِبَاحَةِ خُرُوجِ النِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ إِلَى الْمُصَلَّى وَشُهُودِ الْخُطْبَةِ مُفَارِقَاتٌ لِلرِّجَالِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ، سِيرِينَ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ كُنَّا نُؤْمَرُ بِالْخُرُوجِ فِي الْعِيدَيْنِ وَالْمُخَبَّأَةُ وَالْبِكْرُ قَالَتِ الْحُيَّضُ يَخْرُجْنَ فَيَكُنَّ خَلْفَ النَّاسِ يُكَبِّرْنَ مَعَ النَّاسِ ‏.‏
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৯। দু’ ঈদের সালাত (كتاب صلاة العيدين)
হাদিস নম্বরঃ ১৯৪১

১. দু’ ঈদের দিনে নারীদের ঈদগাহে যাওয়া এবং পুরুষদের থেকে পৃথক থেকে খুতবায় শারীক হওয়ার বৈধতা প্রসঙ্গে

১৯৪১-(১২/…) ‘আমর আন নাকিদ (রহঃ) ….. উম্মু আতিয়্যাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন। আমরা যেন মহিলাদেরকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে বের করে দেই- পরিণত বয়স্কা, ঋতুবতী ও গৃহবাসিনী সবাইকে। তবে ঋতুবতী মহিলারা সলাত থেকে বিরত থাকবে। বাকী পুণ্যের কাজে ও মুসলিমদের দু’আয় শারীক হবে। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কারো কারো চাদর ওড়না নেই। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য বোন তাকে নিজ চাদর বা ওড়না পরিয়ে দিবে। (ইসলামী ফাউন্ডেশন ১৯২৬, ইসলামীক সেন্টার ১৯৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ
باب ذِكْرِ إِبَاحَةِ خُرُوجِ النِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ إِلَى الْمُصَلَّى وَشُهُودِ الْخُطْبَةِ مُفَارِقَاتٌ لِلرِّجَالِ وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ، سِيرِينَ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ نُخْرِجَهُنَّ فِي الْفِطْرِ وَالأَضْحَى الْعَوَاتِقَ وَالْحُيَّضَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ فَأَمَّا الْحُيَّضُ فَيَعْتَزِلْنَ الصَّلاَةَ وَيَشْهَدْنَ الْخَيْرَ وَدَعْوَةَ الْمُسْلِمِينَ ‏.‏ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِحْدَانَا لاَ يَكُونُ لَهَا جِلْبَابٌ قَالَ ‏ “‏ لِتُلْبِسْهَا أُخْتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا ‏”‏ ‏.‏
গ্রন্থঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫/ ঈদ (أَبْوَابُ الْعِيدَيْنِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯
সালাতুল ঈদায়নে শরীক হওয়ার জন্য মহিলাদের বহির্গমন।

৫৩৯. আহামদ ইবনু মানী’ (রহঃ) ….. উম্মু আতিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালিকা, তরুনী, গৃহিণী, যুবতী সকল মহিলাকেই সালাতুল ঈদে বের হওয়ার জন্য বলতেন। তবে ঋতুবতী মহিলারা সালাত (নামায/নামাজ) স্থল থেকে দূরে থাকতেন। তারা কেবল মুসলিমদের সঙ্গে দু’আয় শরীক হতেন। জনৈক মহিলা একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, যদি কারো চাঁদর না থাকে (তবে সে কিভাবে বের হবে?), তিনি বললেনঃ তার কোন ভগ্নি তাকে একটি চাঁদর ধার দিয়ে দিবে। – ইবনু মাজাহ ১৩০৭, ১৩০৮, বুখারি ও মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯ [আল মাদানী প্রকাশনী]
হাদিসের মানঃ সহিহ
باب مَا جَاءَ فِي خُرُوجِ النِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا مَنْصُورٌ، وَهُوَ ابْنُ زَاذَانَ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُخْرِجُ الأَبْكَارَ وَالْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ وَالْحُيَّضَ فِي الْعِيدَيْنِ فَأَمَّا الْحُيَّضُ فَيَعْتَزِلْنَ الْمُصَلَّى وَيَشْهَدْنَ دَعْوَةَ الْمُسْلِمِينَ قَالَتْ إِحْدَاهُنَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ لَمْ يَكُنْ لَهَا جِلْبَابٌ قَالَ ‏ “‏ فَلْتُعِرْهَا أُخْتُهَا مِنْ جَلاَبِيبِهَا ‏”‏ ‏.‏

গ্রন্থঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫/ ঈদ (أَبْوَابُ الْعِيدَيْنِ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ৫৪০
সালাতুল ঈদায়নে শরীক হওয়ার জন্য মহিলাদের বহির্গমন।
৫৪০. আহমদ ইবনু মানী’ (রহঃ) …… উম্মু আতিয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহা সূত্রেও অনুরূপ বর্ণিত আছে। – তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৫৪০ [আল মাদানী প্রকাশনী]
এই বিষয়ে ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ উম্মু আতিয়্যা বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। কতক আলিম এই হাদীস অনুসারে অভিমত গ্রহণ করেছেন। তারা দুই ঈদের সালাতে মহিলাদের গমনের অনুমতি দিয়েছেন। আর কতক আলিম তা অপছন্দনীয় বলে মত প্রকাশ করেছেন। ইবনু মুবারক (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, এই যুগে সালাতুল ঈদায়নের উদ্দেশ্যে মহিলাদের গমন করা আমি অপছন্দনীয় বলে মনে করি। মহিলারা যদি এই বিষয়ে বায়না ধরেন তবে তার স্বামী তাকে সাজ-সজ্জা না করে সাধারণ কাপড়ে বের হওয়ার অনুমতি দিতে পারেন। কিন্তু তারা যদি এইভাবে সাদাসিধে ধরনে বের হতে অস্বীকার করে তবে স্বামী তাদেরকে বের হতে নিষেধ করতে পারেন। আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ বর্তমানে মেয়েরা কি করছে তা যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখতেন তবে অবশ্যই তিনি মসজিদে যেতে তাদেরকে নিষেধ করতেন যেভাবে বনী ইসরাঈল মহিলাদের নিষেধ করে দেওয়া হয়েছিল। সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সালাতুল ঈদের উদ্দেশ্যে মহিলাদের গমন অপছন্দনীয় বলে মত প্রকাশ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ
باب مَا جَاءَ فِي خُرُوجِ النِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، بِنَحْوِهِ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَجَابِرٍ، ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُمِّ عَطِيَّةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَرَخَّصَ لِلنِّسَاءِ فِي الْخُرُوجِ إِلَى الْعِيدَيْنِ وَكَرِهَهُ بَعْضُهُمْ وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ أَكْرَهُ الْيَوْمَ الْخُرُوجَ لِلنِّسَاءِ فِي الْعِيدَيْنِ فَإِنْ أَبَتِ الْمَرْأَةُ إِلاَّ أَنْ تَخْرُجَ فَلْيَأْذَنْ لَهَا زَوْجُهَا أَنْ تَخْرُجَ فِي أَطْمَارِهَا الْخُلْقَانِ وَلاَ تَتَزَيَّنْ فَإِنْ أَبَتْ أَنْ تَخْرُجَ كَذَلِكَ فَلِلزَّوْجِ أَنْ يَمْنَعَهَا عَنِ الْخُرُوجِ ‏.‏ وَيُرْوَى عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ لَوْ رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ الْمَسْجِدَ كَمَا مُنِعَتْ نِسَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ ‏.‏ وَيُرْوَى عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ أَنَّهُ كَرِهَ الْيَوْمَ الْخُرُوجَ لِلنِّسَاءِ إِلَى الْعِيدِ ‏.‏

গ্রন্থঃ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৯/ উভয় ঈদের নামায (كتاب صلاة العيدين)
হাদিস নম্বরঃ ১৫৬১
৩/ কিশোরী এবং যুবতী নারীদের উভয় ঈদের সালাতে বের হওয়া

১৫৬১। আমর ইবনু যুরারাহ (রহঃ) … হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক, বলা ব্যতীত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে স্মরণ করতেন না। একবার আমি তাকে বললাম, তুমি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ এরূপ বলতে শুনেছ? সে বলল হ্যাঁ; তার উপর আমার মাতা-পিতা কুরবান হোক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, কিশোরী, যুবতী এবং ঋতুমতিগণ যেন বের হয় এবং তারা যেন ঈদগাহ এবং মুসলমানদের দোয়ায় উপস্থিত থাকে আর ঋতুমতিগণ যেন সালাতের স্থান থেকে দূরে অবস্থান করে।
[সহীহ। বুখারী ৯৮০, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ১৯৩৩]
হাদিসের মানঃ সহিহ
باب خُرُوجِ الْعَوَاتِقِ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ فِي الْعِيدَيْنِ أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ زُرَارَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ حَفْصَةَ، قَالَتْ كَانَتْ أُمُّ عَطِيَّةَ لاَ تَذْكُرُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ قَالَتْ بِأَبَا ‏.‏ فَقُلْتُ أَسَمِعْتِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ كَذَا وَكَذَا فَقَالَتْ نَعَمْ بِأَبَا قَالَ ‏ “‏ لِيَخْرُجِ الْعَوَاتِقُ وَذَوَاتُ الْخُدُورِ وَالْحُيَّضُ وَيَشْهَدْنَ الْعِيدَ وَدَعْوَةَ الْمُسْلِمِينَ وَلْيَعْتَزِلِ الْحُيَّضُ الْمُصَلَّى ‏”‏ ‏.‏
গ্রন্থঃ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৯/ উভয় ঈদের নামায (كتاب صلاة العيدين)
হাদিস নম্বরঃ ১৫৬২
৪/ মানুষের স্থান থেকে ঋতুমতিদের দূরত্বে অবস্থান করা
১৫৬২। কুতায়বা (রহঃ) … মুহাম্মাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাত করে তাকে বললাম, আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন? তিনি যখনই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে স্মরণ করতেন, বলতেন, আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কিশোরী এবং যুবতীদেরকে রওয়ানা করে দেবে যাতে তারা ঈদের সালাতে এবং মুসলমালদের দোয়ায় উপস্থিত থাকতে পারে। আর ঋতুমতিগণ যেন মানুষের সালাতের স্থান থেকে দূরে অবস্থান করে। أُمَّ عَطِيَّةَ فَقُلْتُ لَهَا هَلْ سَمِعْتِ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ إِذَا ذَكَرَتْهُ قَالَتْ بِأَبَا قَالَ ‏ “‏ أَخْرِجُوا الْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ فَيَشْهَدْنَ الْعِيدَ وَدَعْوَةَ الْمُسْلِمِينَ وَلْيَعْتَزِلِ الْحُيَّضُ مُصَلَّى النَّاسِ ‏”‏ ‏.‏
দুঃখের বিষয় হল আজকে দেখা যায়, অনেকে মেয়েদের ঈদের সালাতে অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করেন। অনেকে বাধা দেন। আবার কোথাও মহিলাদের জন্য ঈদের সালাতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না বা এটাকে একেবারে অপ্রয়োজনীয় মনে করা হয়। বলা হয়, বর্তমান যুগ ফিতনার যুগ, কোন নিরাপত্তা নেই ইত্যাদি বলে কত অজুহাত সৃষ্টি করা হয়, যাতে মেয়েরা ঈদের সালাতে অংশ না নেয়। আসলে কোন অজুহাতই এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহর রাসূল সা.-এর নির্দেশ ও তাঁর সুন্নাহর বিপরীতে যত অজুহাত ও যুক্তি দেয়া হোক না কেন সবই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যেমন আমরা এ হাদিসটিতে দেখি আল্লাহর রাসূল সা. কোন অজুহাত গ্রহণ করেননি। কেউ বলেছিল তার ওড়না নেই। রাসূল সা. বললেন তোমার অন্য বোন থেকে ওড়না ধার করে নেবে। এমনকি যারা ঋতুবতী ছিল তাদেরকেও নির্দেশ দেয়া হল যে, তোমরা ঈদগাহে যাবে। তাদের সালাত আদায় বৈধ না হওয়া সত্ত্বেও ঈদের জামাত ও সালাত প্রত্যক্ষ করবে। তাই আমাদের কর্তব্য হবে আল্লাহর রাসূল সা.-এর মৃতপ্রায় এ সুন্নতকে বাস্তবায়ন করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আমাদের মনে রাখতে হবে যুগের ফিতনা ও মেয়েদের ফিতনা সম্পর্কে আমাদের চেয়ে আল্লাহর রাসূল সা. অনেক বেশি সচেতন ছিলেন।
(সুত্র: সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা, মাসাইল ও তৎপর্য)

আমার পরিচিত একজন তরুন মুফতিকে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন আপনারা মেয়েদের ঈদ ও জুমার সালাতে শরীক হতে বাধা দেন? তিনি উত্তরে বললেন :
আয়েশা রা. একবার বলেছেন, আজ যদি রাসূলুল্লাহ সা. জীবিত থাকতেন তাহলে তিনি মেয়েদের মসজিদে যেতে বাধা দিতেন। তাই আমরা মেয়েদের ঈদগাহ ও মসজিদে যেতে বারণ করি।
আমি তাকে বললাম, আল্লাহ তাআলা কার কথা মানার জন্য আমাদের আদেশ করছেন? রাসূলের কথা, না তার স্ত্রীর কথা?
আয়েশা রা. এ কথা বলেছেন ঠিক আছে, কিন্তু তিনি কি কোন মেয়েকে ঈদগাহ বা মসজিদে যেতে বাধা দিয়েছেন?
তার এ বক্তব্যের উদ্দেশ্যতো এটাই যে, রাসূল সা. থাকলে বাধা দিতেন। এখন তিনি নেই, তাই এখন বাধা দেয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই।

ঈমানদার ব্যক্তিমাত্র স্বীকার করবেন যে, রাসূল সা. যা হুকুম করে গেছেন তা রহিত করার ক্ষমতা কারো নেই।
তাই যে সকল আলেম, ইমাম, মুফতী সাহেবরা মেয়েদের ঈদগাহ ও মসজিদে আসতে বাধা দেন তারা নিজেদের ব্যক্তিগত মতের অনুসরন করেন, রাসূলুল্লাহর সুন্নাতের অনুসরণ নয়। বরং সুন্নাহর বিরোধীতা করেন প্রকাশ্যে।
আর এ সমস্যাটা ভারতীয় উপমহাদেশ ও আফগানিস্তানে বেশী। এ সকল এলাকার আলেমদের ধারনা মেয়েরা ঈদগাহে বা মসজিদে গেলে পুরুষ মুসল্লী যারা তাদের দেখবে তাদের ঈমান আমল সব বরবাদ হয়ে যাবে। চোখ নাপাক হয়ে যাবে।
এ ধারনা বদলাতে হবে।

তাই ঈদ জামাআতের সকল কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবী থাকবে, আপনার নিজ নিজ ঈদগাহে মেয়েদের অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেবেন। এটা আমাদের দাবী নয় বরং রাসূলুল্লাহ সা. এর সুন্নাতেরও দাবী। ইসলামি সংস্কৃতির একটি সমৃদ্ধ অংশ। রাসূলুল্লাহ সা. এর সে কথাটি একটু বুঝতে চেষ্টা করুন : হে আবু বকর, সকল জাতির একটি উৎসব আছে আর এ ঈদ হল আমাদের উৎসব।